এম.বশিরুল আলম,লামাঃ
লামা টি.টি এন্ড ডি.সি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রদান শিক্ষক মোকাম্মেল আমিন কুতুবীর বদলী আদেশ প্রত্যাহারের দাবীতে ছাত্রছাত্রীরা বিদ্যালয় বর্জন করেছে। শনিবার (৩০ জুলাই) থেকে এস.এম.সি’র সদস্য ও স্থানীয় ছাত্র অভিভাবকরা এই সিদ্ধান্তের পক্ষে মত প্রকাশ করেছেন। বর্তমান প্রধান শিক্ষক মোকাম্মেল আমিন কুতুবী বিগত প্রায় বছর খানেক আগে এই বিদ্যালয়ে যোগদানের পর পড়া-লেখার গতি সঞ্চার হয়ে বিদ্যালয়ে মানসম্মত পরিবেশ ফিরে আসে। ছাত্র অভিভাবক ফাতেমা বেগম, হালিমা বেগম, মো: মনির আলম, মো: আবদুল্যাসহ অসংখ্য অভিভাবকরা জানান, প্রধান শিক্ষক মোকাম্মেল স্যার সাইকেলযোগে সকাল সন্ধ্যা প্রতিটি বাড়ি-ঘরে গিয়ে তাদের ছেলে-মেয়েদের লেখা-পড়া ও খেলা-ধুলায় উদ্ভুদ্ধ করে চলছেন। অভিভাবক মরিয়ম বেগম, আয়েশা বেগম ও মোঃ জসিম উদ্দিন জানান, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের স্বারক নং- ২৯.২৩৫.০০৪.৩৩.০৯.০৮৭(অংশ-৩).২০১৫-৪২৯,তাং- গত ২৮,০৪,২০১৬ মূলে এক পত্রে লামা হ্লাচ্ছাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (নন্দিতা শ্রী দেব চৌধুরীকে) এবং একই উপজেলা লামামুখ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক-(নুরুল আবছার) এর মধ্যে প্রশাসনিক কারণে বদলী অনুমোদন নির্দেশক্রমে জ্ঞাপন করেন। এদিকে একই দপ্তর থেকে ২৪-৭-২০১৬ তারিখের, ২৯.২৩৫.০০৪.৩৩.০৯.০৮৭ (অং-২) ২০১১-৭১৬ নং স্বারকে আদেশের প্রেক্ষিেিত বদলী আদেশে বলা হয়“জনাব মোকাম্মেল আমিন কুতুবীকে টিটিএন্ড ডিসি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে হ্লাচ্ছাপাড়া সরকার্ িপ্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবং নন্দিতা শ্রীদেব চৌধুরীকে হ্লাচ্ছাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে টিটি এন্ড ডিসি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলী আদেশ জারী করেন কর্তৃপক্ষ।
তিন মাসের ব্যবধানে একজন শিক্ষককে দুইদফা বদলী! ও কর্তৃপক্ষের রহস্য জনক আচরণে টিটি এন্ড ডিসি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির মতামত যাচাই না করে প্রধান শিক্ষক বদলী সংক্রান্ত কর্তপক্ষের এমন নির্দেশনার ফলে স্কুলের শিক্ষার্থীও অভিভাবকের মধ্যে চরম অসন্তোষ-ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরই জের ধরে শিশুরা স্কুল বর্জন করেছে, এক পর্যায়ে আন্দোলনে নেমেছে অভিভাবকরা। স্থানীয়রা আরো বলেন, “মোকাম্মেল স্যার প্রতিদিন সকাল ৮ টায় স্কুলে এসে অনুপস্থিত ছাত্রদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে উপস্থিতি নিশ্চিত করেন। স্কুল ছুটির পর দুর্বল ছাত্র-ছাত্রীদের সন্ধ্যা পর্যন্ত বিনা পারিশ্রমিকে পাঠদান করেন। স্কুলের ৯০% ছাত্র-ছাত্রী দরিদ্র পরিবারের হওয়ায় তাদের ঝরে পড়া রোধে পরিশ্রম করে যাচ্ছে”। এর ফলে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবকরা স্কুল ম্যানেজিং কমিটি (এসএমসি) ও পেরেন্টস-টিচার্স এসোসিয়েশন (পিটিএ) সকলের নিকট গ্রহনযোগ্যতা রয়েছে এ শিক্ষকের। ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাকরা আরো বলেন, মোকাম্মেল স্যার চলে গেলে তারা এ স্কুলে পড়বে না। ছাত্র-অভিভাবকরা বলেন, মোকাম্মেল স্যার শুধু শিক্ষক নয়, তিনি এই বিদ্যালয়ের ছাত্র অভিভাবকদের অভিভবাক। তার ¯েœহসূলভ আচরণে বিদ্যালয়গামী হচ্ছে শিশুরা। শনিবার থেকে বিদ্যালয় বর্জনের বিষয়ে স্থানীয় এস.এম.সি কমিটি ও অভিভাবকরা জানান, কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয় ও তাদের শিশুদের পড়া-লেখার কথা না ভেবে বর্তমান প্রধান শিক্ষককে বিনা কারণে বদলী করে দেয়। এই বদলী আদেশ প্রত্যাহার করে প্রধান শিক্ষক মোকাম্মেলকে পুন:বহাল করা না হলে কোন ছেলে-মেয়ে বিদ্যালয়ে আসবেনা, এমন আল্টিমেটাম দিয়েছে এলাকার ছাত্র অভিভাবক সকলে। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মোকাম্মেল- জানান, সরকারি চাকুরী করি, একজন শিক্ষক হিসেবে যেখানে যে বিদ্যালয়ে দেবে সেখানেতো পড়া-লেখা করাতে হবে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোকাম্মেলের বদলী পুন:র্বিবেচনার জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের বরাবরে এসএমসি, পিটিএসহ ৬২ জন অভিভাবকের স্বাক্ষরিত অবেদন জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এব্যপারে উপজেলা শিক্ষা অফিস্রা যতিন্দ্র মোহন মন্ডল জানান, বিষয়টি খুবই দু;খ জনক। কর্তৃপক্ষ স্থানীয়দের দাবী পূরণ করবেন মর্মে আশ্বস্থ করেছেন।
পাঠকের মতামত